মোঃ আজগার আলী, জেলা প্রতিনিধি সাতক্ষীরাঃ

সাতক্ষীরার কালিগঞ্জের নলতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকের প্রহারে নবম শ্রেণির ছাত্র রাজপ্রতাপ দাসের মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেপ্তার ৪ শিক্ষকের জামিন নামঞ্জুর হয়েছে। আজ মঙ্গলবার ১৮ই জুলাই দুপুরে সাতক্ষীরা জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (কালিগঞ্জ) রাকিবুল ইসলামের আদালতে তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন।

 

সাতক্ষীরা আদালতের আইনজীবী অ্যাডঃ জিয়াউর রহমান জিয়া জানান, জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত আসামিদের জামিন নামঞ্জুর করেছেন। আমরা এ আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাব। এদিকে, দ্বিতীয় দিনের মত পাঠদান বন্ধ রয়েছে কালিগঞ্জের নলতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে। এতে ব্যাহত হচ্ছে শ্রেণি কার্যক্রম।

 

ঘটনা তদন্তে তদন্তের জন্য সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুব কবির অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শেখ মঈনুল ইসলামকে প্রধান করে চার সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। কমিটিকে পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। এছাড়াও সাতক্ষীরা জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা অজিত কুমার সরকার কালিগঞ্জ সরকারি পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) ইলিয়াস হোসেনকে প্রধান করে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। ঐ কমিটিকে ৩ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলেছেন। তদন্ত কমিটি গঠন ও বিদ্যালয়ের শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কালিগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ।

 

এর আগে রোববার সকাল ১০ টার দিকে নলতা হাইস্কুলের বর্ধিত ভবনে ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রীর জন্মদিনে কেক কাটার ঘটনাকে কেন্দ্র করে নবম শ্রেণির ছাত্র রাজপ্রতাপ দাসকে মারধর করেন সহকারী শিক্ষক অবকাশ খাঁ। পরে বাড়িতে যেয়ে অসুস্থ্যবোধ করায় তাকে হাসপাতালে পাঠানোর পথে মারা যায় সে। এতে উত্তেজিত জনতা স্কুলে ব্যাপক ভাংচুর চালায়। এ ঘটনার পরদিন ১৭ই জুলাই নিহতের বাবা দীনবন্ধু দাস বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুল মোনায়েম, সহকারী প্রধান শিক্ষক আবদুল মুহিতসহ ৫ শিক্ষকের নামে কালিগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। পুলিশ ইতোমধ্যে ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।

 

সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে সোমবার দুপুরে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। বিকেলে পুলিশের কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে নলতা শ্মশানে রাজপ্রতাপের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে।

 

কালিগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মামুন রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, নিহত ছাত্রের বাবার দায়েরকৃত মামলার ৫ আসামির মধ্যে ৪ জনকে ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অপর আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। বর্তমানে সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে জানান তিনি।